হিসাব চক্র বলতে কি বুঝায়? হিসাব চক্রের ৬টি ধাপের নাম লিখুন।
হিসাব চক্র বলতে কি বুঝায়? হিসাব চক্রের ৬টি ধাপের নাম লিখুন।
এই প্রশ্নটির উত্তর পেতে হলে অবশ্যই আপনাকে আমাদের ওয়েবসাইটের এই পোস্ট/আর্টিকেল
টি সম্পূর্ণ পড়তে হবে এবং সেই সাথে প্রশ্নের উত্তর দেখতে “উত্তর দেখুন” Button টিতে ক্লিক করুন।
হিসাব চক্র বলতে কি বুঝায়? হিসাব চক্রের ৬টি ধাপের নাম লিখুন।
উত্তর: যে ধারাবাহিক ও চক্রাকার পদ্ধতিতে হিসাব বিজ্ঞানের কার্যাবলী ধাপে ধাপে
সম্পন্ন হয় তাকে হিসাবচক্র বলে।
হিসাব চক্রের ৬টি ধাপের নাম | |
---|---|
লেনদেন সনাক্তকরণ ও পরিমাপকরণ (Indentification and Measurement of Transactions) | |
লেনদেন লিপিবদ্ধকরণ (Recording Transactions) | |
শ্রেণীবদ্ধকরণ (Classification of Transations) | |
সংক্ষিপ্তকরণ (Summarizing) | |
সমন্বয় ও সমাপনি দাখিলা (Adjusting and Closing Entrises) | |
আর্থিক বিবরণী প্রস্তুতকরণ (Preparation of Financial Statements) |
যে সকল পরীক্ষায় প্রশ্নটি এসেছে:
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন || হিসাব সহকারী
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন || হিসাব সহকারী
হিসাববিজ্ঞানের কার্যক্রম ধাপে ধাপে পর্যায়ক্রমিকভাবে সম্পন্ন হয়। অর্থাৎ
হিসাববিজ্ঞান হল একটি ধারাবাহিক ও সুশৃংখল কার্য প্রক্রিয়া। যে ধারাবাহিকতায়
চক্রাকারে হিসাব কার্যক্রম আবর্তিত হয় তাকে হিসাব চক্র বলে। বড়
প্রতিষ্ঠানগুলোতে বৎসরে লক্ষাধিক লেনদেন সংগঠিত হয়। এই বিপুল সংখ্যক লেনদেন
বিভিন্ন উৎস দলিল (যেমনরশিদ, মেমো, ভাউচার, চালান, দেনা-পাওনা বই ইত্যাদি) এর
ভিত্তিতে প্রাথমিক পর্যায়ে সাহায্যকারী হিসাবের বই জাবেদায় লিপিবদ্ধ করা হয়।
পরবর্তীতে জাবেদায় অন্তর্ভুক্ত সকল লেনদেনের সাথে সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহকে
সুনির্দিষ্ট ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, আয়, ব্যয়, দায় বা সম্পত্তির হিসাব অনুসারে
পৃথক পৃথক শ্রেণীতে বিভক্ত করে খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এরপর খতিয়ানে
সংরক্ষিত হিসাবের জেরসমূহ নিয়ে হিসাবের গাণিতিক শুদ্ধতা যাচাই করার জন্য
রেওয়ামিল প্রস্তুত করা হয। সংশিণ্ঢষ্ট আর্থিক বছরের সমন্বয় সহকারী ও সমাপনি
দাখিলা হিসাবভুক্ত করার পর আর্থিক বিবরণীসমূহ যেমন-ক্রয়বিক্রয় হিসাব,
লাভ-লোকসান হিসাব ও উদ্বৃত্তপত্র প্রস্তুত করা হয়। সব শেষে আর্থিক বিবরণীসমূহের
বিশদ ব্যাখ্যা ও বিশেণ্ঢষণ করা হয়। হিসাব কার্যক্রমের এই নিয়মিত ও পর্যায়ক্রমিক
আবর্তন ও পুনরাবৃত্তিকে হিসাব চক্র বলে। হিসাববিজ্ঞানের চলমান প্রতিষ্ঠান ধারণা
অনুযায়ী ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম অনির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত চলতে থাকবে বলে
ধরে নেয়া হয়। কিন্তু নির্দিষ্ট হিসাব কাল শেষে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের কার্যাবলীর
ফলাফল ও আর্র্থিক অবস্থা নির্ণয়ের জন্য দু’তরফা দাখিলা পদ্ধতি মোতাবেক একটি
সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় হিসাব কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হয়। যেমন-
লেনদেন লিপিবদ্ধকরণ;
শ্রেণীবদ্ধকরণ;
সংক্ষিপ্তকরণ;
চূড়ান্ত হিসাব প্রণয়ন; ও
ফলাফল বিশেণ্ঢষণ।
ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান যতদিন সচল থাকবে, ততদিন হিসাবের এই সুনির্দিষ্ট কার্যক্রম চলতে থাকবে। হিসাবের এই সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া যেভাবে পর্যায়ক্রমে আবর্তিত হয় তাকে হিসাব চক্র বলে।
হিসাব চক্রের ধাপসমূহ: প্রতিষ্ঠান চলমান থাকাকালীন হিসাব চক্রটি প্রতিনিয়ত আবর্তিত হতে থাকে। হিসাব চক্রের ধাপসমূহ নিম্নে বর্ণিত হল:
লেনদেন লিপিবদ্ধকরণ;
শ্রেণীবদ্ধকরণ;
সংক্ষিপ্তকরণ;
চূড়ান্ত হিসাব প্রণয়ন; ও
ফলাফল বিশেণ্ঢষণ।
ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান যতদিন সচল থাকবে, ততদিন হিসাবের এই সুনির্দিষ্ট কার্যক্রম চলতে থাকবে। হিসাবের এই সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া যেভাবে পর্যায়ক্রমে আবর্তিত হয় তাকে হিসাব চক্র বলে।
হিসাব চক্রের ধাপসমূহ: প্রতিষ্ঠান চলমান থাকাকালীন হিসাব চক্রটি প্রতিনিয়ত আবর্তিত হতে থাকে। হিসাব চক্রের ধাপসমূহ নিম্নে বর্ণিত হল:
-
১. লেনদেন সনাক্তকরণ ও পরিমাপকরণ:
হিসাব চক্রের প্রথম ধাপে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে সংঘটিত সমস্ত ঘটনাগুলো থেকে
লেনদেন সনাক্তকরণ ও অর্থের মাপ কাঠিতে পরিমাপ করতে হয়। যে সমস্ত ঘটনা
অনার্থিক এবং টাকার অংকে পরিমাপ করা যায় না তা হিসাবের বইতে লিপিবদ্ধ করা যায়
না।
২. লেনদেন লিপিবদ্ধকরণ:
হিসাব চক্রের দ্বিতীয় ধাপে হিসাবের বইতে লেনদেন লিপিবদ্ধ করা হয়। লেনদেন
সংঘটিত হওয়ার পর প্রতিটি লেনদেনের দ্বৈতসত্তা বিশেণ্ঢষণ করে এক পক্ষকে ডেবিট
ও অন্য পক্ষকে ক্রেডিট করে প্রাথমিক পর্যায়ে তারিখ অনুযায়ী হিসাবের বই
জাবেদায় লিপিবদ্ধ করা হয়। জাবেদায় লেনদেন লিপিবদ্ধ করাকে জাবেদাভুক্তকরণ বলা
হয়। হিসাব কার্যক্রমে জাবেদার গুরুুত্ব অনেক বেশী। কারণ এই বইতে কোন লেনদেন
লিপিবদ্ধ করা না হলে পরবর্তী হিসাবগুলি সঠিক হয় না।৩. শ্রেণীবদ্ধকরণ:
লেনদেনগুলোকে জাবেদাভুক্তকরণের পর সমজাতীয় লেনদেনগুলো শ্রেণীবিন্যাস করে পৃথক
পৃথক শিরোণামে লিপিবদ্ধ করা হয়। এ কার্যক্রমকে খতিয়ানভুক্তকরণ বলা হয়। যে
হিসাবের বইতে লেনদেনসমূহ শ্রেণীবদ্ধভাবে ও সংক্ষিপ্তাকারে পাকাপাকিভাবে
লিপিবদ্ধ করা হয় তাকে খতিয়ান বলে। খতিয়ানে লিপিবদ্ধ করার কাজকে
খতিয়ানভুক্তকরণ বলা হয়।৪. সংক্ষিপ্তকরণ:
খতিয়ানস্থিত হিসাবসমূহের ডেবিট ও ক্রেডিট উদ্বৃত্তসমূহ নিয়ে একটি তালিকা
প্রস্তুত করা হয়। এই তালিকাকে রেওয়ামিল বলে। রেওয়ামিল প্রস্তুত করা হয়
হিসাবসমূহের গাণিতিক শুদ্ধতা যাচাই ও আর্থিক বিবরণী প্রস্তুতে তথ্য সরবরাহ
করার জন্য। রেওয়ামিলের দুইপার্শ্ব সর্বদাই সমান হয়। এক্ষেত্রে সমস্ত খতিয়ানের
জের ১টি শীটে উপস্থাপন করা হয় বলে এ ধাপকে সংক্ষিপ্তকরণ বলা হয়।৫. সমন্বয় ও সমাপনি দাখিলা:
রেওয়ামিল প্রস্তুতের পর বকেয়া ও অগ্রিম আয়-ব্যয় সমন্বয় করে হিসাব কালের সঠিক
আয়-ব্যয় নির্ণয় করা হয়। হিসাবের কোথাও ভুল-ত্রুটি থাকলে সংশোধন করতে হয়। এরূপ
সমন্বয় ও সংশোধন, সমন্বয় ও সংশোধনী দাখিলার মাধ্যমে করা হয়। তাছাড়া, মুনাফা
জাতীয় আয় ও ব্যয় হিসাবগুলোর উদ্বৃত্ত আর্থিক বিবরণীতে স্থানান্তর করে
মুনাফাজাতীয় হিসাবসমূহ বন্ধ করতে হয়। মুনাফা জাতীয় হিসাব বন্ধের জন্য যে
দাখিলা দেয়া হয় তাকে সমাপনী দাখিলা বলে।৬. আর্থিক বিবরণী প্রস্তুতকরণ:
রেওয়ামিল ও সমন্বয় তথ্য নিয়ে আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত করা হয়। সাধারণত
হিসাবকাল শেষে আর্থিক ফলাফল ও আর্থিক অবস্থা জানার জন্য আর্থিক বিবরণী
প্রস্তুত করা হয়। আর্থিক বিবরণীসমূহের মধ্যে উৎপাদন ব্যয় বিবরণী, আয় বিবরণী ও
উদ্বৃতপত্র প্রধান।৭. বিবরণী বিশেণ্ঢষণ ও ব্যাখাদান:
ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সাথে স্বার্থ সংশিণ্ঢষ্ট বিভিন্ন পক্ষ যেমন মালিক,
ব্যবস্থাপনা, পাওনাদার, দেনাদার, কর্মচারী, সরকার, কর কর্তৃপক্ষ, জনসাধারণ,
গবেষক প্রমুখ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের প্রয়োজন অনুভব করে। আর্থিক বিবরণী
ও এর ব্যাখ্যা বিশেণ্ঢষণ থেকে তথ্য বিবরণ ও প্রতিবেদনের আকারে ঐ সমস্ত
পক্ষগুলোকে সরবরাহ করে। বিবরণী বিশেণ্ঢষণের ক্ষেত্রে অনুপাত, তহবিল বিবরণী,
সমচ্ছেদ বিন্দু বিশেণ্ঢষণ ইত্যাদি কৌশল ব্যবহার করা হয়।৮. প্রারম্ভিক জাবেদা লিখন:
হিসাবকাল শেষে সম্পত্তি ও দায় হিসাবসমূহের উদ্বৃত্ত একটি প্রারম্ভিব জাবেদার
মাধ্যমে পরবর্তী বৎসরের হিসাব বইয়ে স্থানান্তর করা হয়। এভাবেই বিগত ও চলতি
বৎসরের হিসাবের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপিত হয় এবং এভাবে হিসাবরক্ষণ চক্রাকারে
আবর্তিত হয়।
ইনসাইট অ্যান্ড ওন্দার্সের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url